পুলিশ সপ্তাহ উদ্বোধন করলেন প্রধান উপদেষ্টা
স্টাফ রিপোর্টার
আপলোড সময় :
২৯-০৪-২০২৫ ১২:৩১:৪২ অপরাহ্ন
আপডেট সময় :
২৯-০৪-২০২৫ ০২:২১:৩৫ অপরাহ্ন
সংবাদচিত্র: সংগৃহীত
রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর ‘ভেঙে পড়া’ পুলিশি ব্যবস্থা ‘পুনরুদ্ধারে’ নানা আয়োজনের মধ্যে দিয়ে শুরু হলো পুলিশ সপ্তাহ। অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস পুলিশ সপ্তাহ উদ্বোধন করেছেন। মঙ্গলবার (২৯ এপ্রিল) সকাল ১০টায় রাজারবাগ পুলিশ লাইন্সে প্রধান উপদেষ্টার ভাষণের মধ্যদিয়ে পুলিশ সপ্তাহ-২০২৫ শুরু হয়। এবার মূল আয়োজন থাকছে তিন দিন।
গত বছরের ৫ অগাস্ট ক্ষমতার পটপরিবর্তনের পর দেশজুড়ে পুলিশি স্থাপনায় হামলা ও জনতার ক্ষোভের মুখে একরকম ভেঙে পড়েছিল পুলিশি ব্যবস্থা। আন্দোলনে পুলিশের ‘নৃশংস হওয়ার’ পেছনে কর্মকর্তাদের দায় দিয়ে ‘বিক্ষুব্ধ’ হয়ে উঠেছিলেন সদস্যরাও। এমন প্রেক্ষাপটের পর পুলিশি ব্যবস্থা ‘কার্যকরে প্রয়াসের’ কথা জানিয়েছেন দায়িত্বরতরা। সংস্কার নিয়ে ব্যাপক আলোচনা ও নানান দাবি-দাওয়ার মুখে শুরু হলো এবারের পুলিশ সপ্তাহ। এবার আনুষ্ঠানিকভাবে সরকারের দায়িত্বরতদের কাছে স্বাধীন পুলিশ কমিশন গঠন, ক্ষতিপূরণ ভাতা, স্বতন্ত্র সাইবার ইউনিট গঠনসহ বেশকিছু দাবির কথা তুলে ধরা হবে বলে জানিয়েছেন পুলিশ কর্মকর্তারা।
অনুষ্ঠানে প্রধান উপদেষ্টা মনোনীত পুলিশ সদস্যদের পদক প্রদান দেবেন। এরপর পুলিশ নারী কল্যাণ সমিতির (পুনাক) স্টল উদ্বোধন ও পরিদর্শন করবেন। দুপুরের পর প্রধান উপদেষ্টার ‘নির্দেশনার আলোকে প্রণীত’ কর্মপরিকল্পনার উপর ওয়ার্কশপ থাকবে। দ্বিতীয় দিন সকাল থেকে পুলিশের বিভিন্ন ইউনিট কর্তৃক ‘প্রেজেন্টেশন’ এবং সন্ধ্যায় পুলিশ কর্মকর্তাদের সঙ্গে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত উপদেষ্টা ও সচিবদের সম্মেলন। তৃতীয় দিনের শুরুতে আইজি’জ ব্যাজ প্রদান ও ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তাদের সাথে আইজিপির সম্মেলন। এরপর প্রথমবারের মতো নাগরিকদের সাথে মতবিনিময় সভা থাকছে।
বিকেলে পুলিশ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন ও পুলিশ অফিসার্স মেসের বার্ষিক সাধারণ সভা এবং সন্ধ্যায় অবসরপ্রাপ্ত ও কর্মরত পুলিশ অফিসারদের পুনর্মিলনী। চতুর্থদিন শুধু পুনাক সমাবেশ ও আনন্দমেলা এবং পুনাক স্টলের পুরস্কার বিতরণীর মাধ্যমে শেষ হবে এবারের পুলিশ সপ্তাহ। এবারের পুলিশ সপ্তাহে সাহসিকতা ও সেবার জন্য মোট ৬২ জন পুলিশ কর্মকর্তা ও সদস্য পদক পাচ্ছেন। এর মধ্যে বাংলাদেশ পুলিশ পদক (বিপিএম) পাচ্ছেন ২৮ জন আর রাষ্ট্রপতির পুলিশ পদক (পিপিএম) পাচ্ছেন ৩৪ জন। তবে আন্দোলনের সময় প্রাণ হারানো কোনো পুলিশ সদস্যকে পদক দেওয়া হয়নি।
সংখ্যার দিক দিয়ে এবার পদক প্রাপ্তদের সংখ্যা গত বছরগুলোর তুলনায় অনেক কম। বছরজুড়ে ভালো কাজ, গুরুত্বপূর্ণ মামলার রহস্য উদঘাটন, অপরাধ নিয়ন্ত্রণ, দক্ষতা, কর্তব্যনিষ্ঠা, সততা ও শৃঙ্খলামূলক আচরণ, সাহসকিতাপূর্ণ কাজের জন্য চারটি ক্যাটাগরিতে (বাংলাদেশ পুলিশ পদক- বিপিএম সাহসিকতা ও সেবা এবং প্রেসিডেন্ট পুলিশ পদক- পিপিএম সাহসিকতা ও সেবা) পদক দেওয়া হয়। বিগত বছরগুলোতে শতাধিক, এমনকি ২০১৯ সালে রেকর্ড সংখ্যক ৩৪৯ জন পুলিশ সদস্যকে এই পুরস্কার দেওয়া হয়।
প্রশংসনীয় ও ভালো কাজের স্বীকৃতিস্বরূপ পুলিশের ২৬৮ কর্মকর্তা ও সদস্য পাচ্ছেন ‘পুলিশ ফোর্স এক্সেমপ্ল্যারি গুড সার্ভিস ব্যাজ’। পুলিশের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ এ পুরস্কার এবারের পুলিশ সপ্তাহের অনুষ্ঠানের তৃতীয় দিন প্রদান করবেন আইজিপি। গত বছর এই ব্যাজ পেয়েছিলেন ৪৮৮ কর্মকর্তা ও সদস্য। পুলিশ সপ্তাহের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত আছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী, বাংলাদেশ পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বাহারুল আলমসহ বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
বাংলাস্কুপ/প্রতিবেদক/এনআইএন
প্রিন্ট করুন
কমেন্ট বক্স